ফোকাস নিউজ:: সিলেটে ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে ভারতীয় শিলং তীর খেলা । এ তীর খেলা এখন শুধু সীমান্তবর্তী এলাকায় সীমাবদ্ধ নয়। সীমান্ত পেরিয়ে এ খেলা এখন সিলেটের অলিগলিতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, এমনকি এ খেলা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে সিলেটের বিভিন্ন উপজেলার প্রত্যান্ত অঞ্চলেও। এ ‘তীর খেলা’য় বিপুল সংখ্যক মানুষ অংশ নিচ্ছে। সিলেটের যেকোন এলাকায় বসেই ইন্টারনেটের মাধ্যমে তারা শিলং জুয়ায় বাজি ধরছে। এ খেলাটি সপ্তাহের ছয় দিনই হয়। প্রতিদিন দুইবার এ খেলার ড্র অনুষ্টিত হয়ে থাকে। সিলেটে তাদের এজেন্টের মাধ্যমে এদেশীয় এজেন্টরা ভারতের এজেন্টেদের সাথে জুয়ার আসরের সমন¦য় করে থাকে। আর ভারতীয় এ ভাগ্যের খেলায় স্কুল কলেজের ছাত্র, দিনমজুর, রিকশাচালক, যানবাহনের চালক-শ্রমিকসহ বেকার যুবকরা অংশ নিচ্ছে। আর এতে করে অনেক স্কুলগামী ছাত্ররা স্কুল ফাঁকি দিয়ে এ খেলায় অংশ নিচ্ছে এতে করে ছাত্রদের মনযোগ ঊনয়ের পরিবর্তে তীর খেলার দিকেই বেশী ঝুঁকছে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, ২০ থেকে ২৫ বছর পূর্বে ভারতীয় ধনকুবেররা এ রকম খেলাটি আবিস্কার করে। এর নাম রাখে মেঘালয়ের আঞ্চলিক ভাষায় ‘তীর খেলা’। স্থানীয় ভাবে খেলাটিকে অনেকেই শিলং তীর, ডিজিটাল নাম্বার খেলা ইত্যাদি নামে অবহিত করে থাকেন। খেলাটি ধরণ হচ্ছে এ রকম যে এদেশের এজেন্টদের মাধ্যমে ১-৯৯ পর্যন্ত নাম্বার বিক্রয় করা হয় যে কোন মূল্যে নেই। লটারিতে ০ থেকে ৯৯ পর্যন্তযে কোনো সংখ্যা কিনে নেওয়া যায়। সর্বনিম্ন ১০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত বাজি ধরা যায়। যত মূল্যে সংখ্যাটি বিক্রয় হবে তার ৭০ গুণ লাভ দেয়া হবে বিজয়ী নম্বরকে। অথাৎ ১০ টাকায় ৭০০ টাকা। একই নম্বর একাধিক লোকও কিনতে পারেন। সবাই কেনা দামের চেয়ে ৭০ গুণ বেশি টাকা পাবেন। প্রতিদিন বিকাল সোয়া ৪টায় ও সাড়ে ৫টায় দুবার এ লটারির ড্র অনুষ্টিত হয়ে থাকে। খেলার ফলাফল দেওয়া হয় অনলাইনে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, সিলেট শহরের কাজির বাজার ,শেখঘাট, বেতের বাজার, শামিমাবাদ, কাজলশাহ্, রিকাবীবাজার, মদিনা মার্কেট, কালীবাড়ী, গোয়াবাড়ী, আখালিয়া নতুন বাজার, আখালিয়া ঘাট, কুমারগাঁও বাসষ্টেন্ড,তেমূখী,লামাকাজি টুকের বাজার, ,বালুচর ,টিলাগড়, আম্বরখানা, মেন্দিবাগ, কদমতলীসহ শহরের কয়েকশত স্পটে ভারতীয় এ জুয়ার আসর বসে থাকে। আর এসব জুয়ার নেতৃত্বে রয়েছেন প্রভাবশালী দলের নেতাকর্মীরা ও প্রশাসনের একাধিক ব্যাক্তি। তাছাড়াও থানার অসাধু কর্মকর্তাদের মাসোহারা দিয়ে চলছে এ খেলা। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ব্যক্তি জানান- আখালিয়া নতুন বাজার এলাকায় রিপন টেলিমকম এর দোকানে প্রকাশে ভারতীয় শিলং তীর খেলা চলচ্ছে। দোকানের মালিক মোহন মিয়া উপর বচল বলে তাকে এক নামে সবায় ছিনেন। সে কাউকে তোয়াক্কা না করে জুয়া খেলা চালিয়ে যাচ্ছে। গোপন সংবাদে জানায়ায় যে মোহন প্রতিনিদি নাকি পুলিশে সোর্স এর মাধ্যোমে পুলিশকে উৎকোচের বিনিময়ে দোকানে প্রকাশ্যে তীর খেলার টোকেন বিক্রয় করছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসী।
পুলিশের পক্ষ থেকে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করেও দমন করা যাচ্ছে না এ জুয়া। গ্রেফতারের পর জামিনে বের হয়ে আবারও এ খেলায়। গত দু‘দিনে নগরী থেকে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) বিশেষ অভিযান চালিয়ে কয়েক জন জুয়াড়িকে গ্রেফতার করা হয়।
Leave a Reply